পাপ ও পূন্য কি ? কিভাবে পাপ -পূণ্য নিরূপন করা হবে ?

উত্তর : মানুষ জন্মের পর থেকেই জেনে আসছে :

১। এটা করা যাবে না বা ও করা ভাল ।

২। এটা করা পাপ ও সেটা করা সওয়াব ।

৩। এটা করা অন্যায় , ওটা করা ন্যায় ।

৪। এটা করা কবীরা গুনাহ , ওটা করা অধীক সওয়াব ।

৫। এটা করলে জাহান্নাম আর ওটা করলেই জান্নাত জান্নাত , ইত্যাদি ।

কিন্তু মানুষ কি কখনও চিন্তা করেছে যে পাপ-পূণ্য , ভাল – মন্দ , ন্যায় -অন্যায় কি ও কিভাবে নিরূপণ করা হয় ?

হয়ত বেশ চমকে গেলেন ! এরূপ তো ভেবে দেখেনি ।

এত জানা জিনিস কি আবার চিন্তা করা লাগে না কি ?

কিন্তু কী বলবেন ? বলার মত উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না তো !

*** مسال ١

দেখুন আপনাকে যদি বলা হয় , মধুর ওজন বেশী না কি তেলের ওজন বেশী ?

আমরা তখন অনেকেই বলতে পারি মধুর ওজন বেশী । কিন্তু কিভাবে বলি ? তখন আমরা মধু ও তেল দু’টোকেই পানির ওজনের সাথে তুলনা করি ।

মধু, আদর্শ মানের পানিতে ডুবে যায় কিন্তু তেল আদর্শ মানের পানিতে ভেসে থাকে । সেই বিচারে আমরা বুঝতে পারি , সমপরিমান / সমআয়াতনের মধুর ওজন , পানির সাপেক্ষ , তেলের ওজনের চেয়ে বেশী বিধায় মধুর ওজন বেশী ।

আবার যদি বলি মধুর ঘনত্ব বেশী না কি তেলের ঘনত্ব ? তখনও আমরা মনে করি মধুর । কিন্তু কিশের তুলনায় নিরূপন করা হল ? নিশ্চয়ই পানির তুলনায় ।

তাছাড়াও সকল মধু, পারদ বা তেলের ঘনত্বের ও তারতম্য আছে বিধায় পানিতে ডুবার মাত্রা বা ভাষার আপেক্ষিক মাত্রার উপরও ভিত্তি করে বলতে পারি , কোন তেলের বা কোন মধুর ঘনত্ব বা কম ।

তাহলে এখানে মূল আদর্শ হল পানি ।

যাকে আপেক্ষিক হিসাবে ব্যাবহার করা হয় ।

আর বিচারক হল আক্বল বা বুনিয়াদী জ্ঞান ।

তাও আল্লাহর দেয়া সবচেয়ে মৌলিক জ্ঞান সম্পদ যা সবকিছুর আগেই আল্লাহ দিয়ে থাকেন ।

***مسال ٢.

ধরুন একজন বললেন আমি অসুস্থ এবং অন্যজন বললেন আমি পুরাপুরি সুস্থ । সেখানেও

কিন্তু একটি আদর্শ স্বাস্থ্য ব্যাবস্থার মাপকাঠি বা মানদন্ডের উপর ভিত্তি করে সুস্থ্য বা অসুস্থ্যতা বুনিয়াদী জ্ঞান বা আক্বলের দ্বারা নিরূপন করি ।

পক্ষান্তরে অজ্ঞান ব্যাক্তি কিন্তু বুনিয়াদী জ্ঞান বা আক্বলের অভাবে তা বুঝতে বা নিরূপন করতে পারে না ।

তাহলে আমরা বলতে পারি , কোরআন হল আল্লাহর দেয়া দুনিয়ার মানুষের জন্য পাপ-পূণ্য , ভাল – মন্দ , ন্যায় -অন্যায় বিচারের জন্য নিরূপণ করার

আদর্শ / Standard মানদন্ড ।

আর আক্বল হল বুনিয়াদি জ্ঞান ।

সুতরাং বুনিয়াদি জ্ঞানের বিচারে কোরআনের আদর্শের বিরুদ্ধে বা বিপক্ষে চিন্তা, কাজ , পরামর্শ দেয়া সবই অন্যায়, পাপ ও মন্দ কাজ ।

আর কোরআনের স্বপক্ষে ও সমর্থিত কাজই ন্যায় , সওয়াব ও ভাল কাজ ।

এবার ধরা যাক পরিমান : ন্যায় -অন্যায় , পাপ-পূণ্য , ভাল -মন্দের পরিমানও কোরআনের আদর্শে গুরুত্বের দিক থেকে বিচার করা হয় ।

যেখানে ওজোর , অনুশোচনা ও পরিত্বানের উপায় নিয়ামক হিসেবে বিবেকের বিচারে আমলে নিতে হয় ।

তাহলে বলতে পারি , কোরআন থেকে লব্দ জ্ঞানের সাপেক্ষে , সমান গুরুত্বের চেয়ে বেশী কোন অপরাধ করলে তাই পাপ , অন্যায় ও মন্দ কাজ , গুনাহ ও কবীরা গুনাহের মত পরিমিত হয় ।

পক্ষান্তরে কোরআন থেকে লব্দ জ্ঞানের সাপেক্ষে , সমান গুরুত্বের চেয়ে কম কোন অপরাধ করলে বা কোন অপরাধ না করলে তাই পর্যায়ক্রমে পূন্য , ন্যায় ও ভাল কাজ , সওয়াব হিসেবে পরিমিত ও পরিগনিত হয় ।

তাহলে আসুন , এবার জ্ঞানের আদর্শ কোরআন জানি , বুঝি ও আক্বল বা বুলিয়াদী জ্ঞান দ্বারা দুনিয়ার সকল কাজ কর্ম নিরূপন করে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলি ও কামিয়াব হই ।

আমীন ।।

আহমেদ জাফর

No comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *