আইন ও সংবিধান ।
প্রান প্রিয় পাঠক সমুদয় ,
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
আশা করি আপনারা অনেকেই আমার লিখা নিয়মিত পড়েন । আপনারা যদি একটু কমেন্ট করে জানান যে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন কিনা , বুজতে কোন কষ্ট হয় কিনা বা ভিন্ন কোন মতামত আছে কি না , তাহলে আমার অন্তত: উপকার হবে এবং সাথে সাথে সবাই উপকৃত হব ইনশাআল্লাহ ।
আমার উদ্দেশ্য ইবলিসকে পরাহত করে আমরা যেন আল্লাহর সন্তুস্টি লাভ করতে পারি এবং দুনিয়া ও পরকালে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে পারি ।
আজকের বিষয় : আইন ও সংবিধান ।
১। আইন :- একটু পিছন ফিরে দেখি , দুনিয়ার প্রারম্ভিক যুগে যখন মানব রচিত কোন আইন ছিল না এবং মানবের চলা ও বুঝার জন্য কোন সংবিধান ও ছিল না ।
তখন আইন ও সংবিধান মানেই এক মাত্র আল্লাহ প্রদত্ত আক্বল / Common Sense / বিবেক ছিল।
আর তার প্রতিপক্ষে ছিল শয়তান বা ইবলিসের কুমন্ত্রনা ।
তখন থেকেই বিবেকের সাথে শয়তানের কুমন্ত্রনা প্রতিটি মানবকে সাংঘার্ষিক ভাবে কাজ করছে এবং তা কিয়ামত পর্যন্ত চলতেই থাকবে ।
মানুষ বিবেক দিয়ে চলার পথে যখনই কোন না কোন বাঁধার সন্মুখীন হতে লাগল , তখনই
আল্লাহ বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে কৌশলে সমাধান দিতে লাগলেন । প্রারম্ভিক যুগের নবী – রসুল ও আদি আসমানী কিতাবও তারই স্বাক্ষর বহন করে ।
কিন্তু সেই সাথে ইবলিসও তাঁর কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে এবং যারা মানষিকভাবে আল্লাহর অদৃশ্যমান শক্তি , স্বাক্ষর , নবী-রসুলের প্রতি কম আনুগত্য ছিল তারা ও তাদের অনুসারীদের
ইবলিস কৌশলে পথ ভ্রস্ট করতে থাকে ।
যুগ- যুগান্তরে মানুষ একাত্ববাদের দিক থেকে দু’টি মেরুকরণে বিভক্ত হয়ে দুদিকের পাল্লাই ভারী হতে থাকে ।
এভাবেই আজকের মুসলিম ও অমুসলিমের আবির্ভাব ঘটে । ফলে আইন ও সংবিধানেও সাংঘার্ষিক মতামত ব্যপকহারে পরিলক্ষিত হতে থাকে ।
আপনারা যারা আইনের ছাত্র তারা এখন হয়ত জানেন , মুসলিম আইন , বৃটিশ আইন ও ভারতীয় উপমহাদেশে ভারতীয় আইনের বিভিন্ন সাংঘার্ষিক বিধান আছে ।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় , যদিও এক সময়ে মুসলিম আইন যৌক্তিকভাবে বেশ কার্যকরী ছিল কিন্তু মহাপ্রতারক ইবলিস পর্যায়ক্রমে মুসলিমদের কোরআন , হাদিস ও বিজ্ঞান- আবিস্কারের দিক থেকে দুরে সরিয়ে দিয়ে অমুসলিমদের , মুসলিমদের উপরে কৌশলে আধিপত্য বিস্তারে সহায়তা করে । দিনে দিনে দুর্বল চিত্তের মুসলিমরা অমুসলিমদের উপর নির্ভরশীল হতে থাকে ।
এভাবে প্রকারন্তরে মুসলিম আইন তথা কোরআনের আইনের প্রয়োগ কমতে থাকে ও বৃটিশ “ল” তথা অমুসলিমদের আইনের প্রয়োগ বাড়তে থাকে ।
এভাবেই আইন ও সংবিধানে কোরআনের হুকুমত কৌশলে রহিত হতে থাকে ।
কিন্তু প্রচলিত আইন ও সংবিধানের মৌলিক ও যৌক্তিক কোন দলিল পাওয়া যাবে না বরং মানব রচিত দলিলই যুগের পর যুগ তারা রেফারেন্স হিসেবে ধরে নিয়ে আইন , বিচার , সালিস ও সংবিধান চলতে থাকে ।
বিধায় কোরআনের ব্যবহার , কোরআন জানা
লোকের মূল্যায়ন কমতে থাকে । এমনকি কোরআন জানা প্রজ্ঞাজনকে আমাদের দেশে বুদ্ধিজীবি হিসেবেও খেতাব দেয়া হয় না ।
* অনুশোচনা ও উত্তরণের পথ : –
১। মনে রাখতে হবে এক মানবের সাথে অন্য
মানবের কোন পার্থ্ক্য নেই বা শত্রুতা ও নেই ,
যেমনটি ছিল না তাদের জন্মের সময়ে । পার্থক্য শুধু তাদের বিবেকের ও তৎপরবর্তিতে আহরণ করা জ্ঞানের ।
২। জ্ঞান আহরনের মৌলিক আধার , আক্বল, কোরআন ও সুন্নাহ সবার মধ্যে সঞ্চারন করতে হবে । তা হলেই ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য বুঝতে কোন দ্বিমত পোষণ করা হবে না ।
৩। যারা ক্ষমতার আসনে আসীন , তাদের নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে ও কোরআন -হাদিসের বিপরীতে তাদের কোন প্রমান বা দলিল থাকলে তা উপস্থাপন করতে বলতে হবে ।
৪। নবাগত থেকে শুরু করে বয়-বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলের মধ্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে , কোরআন-হাদিসের মূল শিক্ষা মাতৃভাষায় অধ্যায়ন করার প্রকৃয়া শিক্ষা দিতে হবে । যাতে প্রত্যেকেই প্রতিদিন পড়তে আগ্রহী হয় ।
এটা দৃঢ় চিত্তে বলতে পারি , একবার পড়ে মর্মার্থ বুঝতে পারলে , নিজেই মনের অজান্তে পড়তে থাকবে ।
৫। যে সকল আইন ও সংবিধান কোরআনের সাথে সাংঘার্ষিক তা বার বার অনুধাবন করে সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে হবে ।
আমীন ।
No comment