সুপারিশ কারা করার যোগ্যতা লাভ করবেন এবং কাদের জন্য সুপারিশ করার অনুমোদন দেয়া হবে ?

প্রান প্রিয় পাঠক সমুদয় ,

‎السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

আজকের বিষয় : شفاعت বা সুপারিশ করা বা এডভোকেসি , কারা করার যোগ্যতা লাভ করবেন এবং কাদের জন্য সুপারিশ করার অনুমোদন দেয়া হবে ?

উত্তর : আমাদের প্রচলিত জীবনে শাফায়াত বা সুপারিশ নিয়ে অনেক অস্পস্ট ধারনা চারণ করা হচ্ছে যাতে করে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে । বিষেশত মানুষ জান্নাত লাভের জন্য পজেটিভ মাইন্ড সেট-আপ করে জান্নাত লাভের জন্য আল্লাহর দেয়া প্রকৃত শর্ত পালনে উদাসীন হয়েও ধরেই নিচ্ছেন হয়ত তারা জান্নাতে যাবেন ।

এই বদ্ধমূল ধারনার উপরে ভক্তি করে যারা গোমরাহীর পথে আছেন বিষেশ করে তাদের জন্য আজকের এই কলম ধরার উদ্দোগ ।

প্রথমত : আম ভাবে দলিল সাপেক্ষে

একথা মানতেই হবে যে , যার আমল নামায় কোন কবীরা গুনাহ থাকা অবস্থায় ( মৃত্যুর আগ পর্যন্ত / স্বজ্ঞানে তওবা করার আগে ) মারা যান, তিনি কখনওই জান্নাতে যাবেন না । বরং তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত ।

এতক্ষনেই হয়ত যারা বিরুপ চিন্তায় মশগুল ছিলেন তারা নড়ে চড়ে বসেছেন ।

এবার আসুন কারা শাফায়াত করার যোগ্যতা লাভ করতে পারেন :

১। শর্ত হল শাফায়াত / এডভোকেসি করার জন্য কারা মনোনীত হবে তা সম্পূর্ন আল্লাহর এখতিয়ার তবে ,

ক) নবী করীম স: সহ নবী ও রসূলগনের মধ্যে যারা সম্পূর্ন পাপাচার মূক্ত অবস্থায় মারা যান ।

খ) কোরআন । ( যারা অধ্যায়ন করেন এবং যারা করেন না , সকলের জন্য স্ব স্ব কর্মের জন্য সঠিক স্বাক্ষ দিবে )।

গ) রোযা – ( যারা রাখেন এবং যারা রাখেন না , সকলের জন্য স্ব স্ব কর্মের জন্য সঠিক স্বাক্ষ দিবে ) ।

ঘ) ফিরিস্তাগনের মধ্যে যাদেরকে আল্লাহ মনোনীত করবেন তারা ও শাফায়াতের যোগ্যতা লাভ করবেন ।

ঙ) মানব কুলের মধ্যেও যারা পাপ বা কুলষ মুক্ত অবস্থায় মারা যাবেন , তাদের মধ্য হতেও

আল্লাহ শাফায়াতের জন্য মনোনীত করবে ।

২। এবার আসি কারা শাফায়াত পাওয়ার যোগ্যতা লাভ করতে পারে ।

ক) যারা কবীরা গুনাহ মাফ করে মারা যাওয়ার যোগ্যতা লাভ করবে ।

খ) শহীদ ব্যাক্তি শহীদি কর্মে যোগদানের পরে শহীদ হওয়ার জন্য মৃত্যুর তওবা করার যথোপযুক্ত সময় না পেলে , তার ও শাফায়াত প্রয়োজন হলে ।

এ ছাড়া বাকী করো জন্য শাফায়াত করার অনুমতি দেয়া হবে না ।

৩। শাফায়াত কবুল হওয়া প্রসংগে :

আল্লাহর রসূল বলেছেন , তিনিও যাবেন না যে , তার সাথে কিয়ামতের দিন শাফায়াত কৃতদের জন্য কি আচারণ করা হবে।

অর্থাৎ কারা শাফায়াত , কার জন্য কবুল করা হবে বা কবুল হবে না , তা সম্পূর্ণ আল্লাহর এখতিয়ার ।

৪। শাফায়াত করার সময় : শাফায়াতের সময় নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে । তা কি শেষ বিচারের রায় ঘোষনার আগে না পরে ?

সকলের অবগতির জন্য অকপটে বলছি , নিশ্চয়ই আগে । আল্লাহর রায় অপরিবর্তনীয় ।

৫। জনশ্রুতি আছে জাহান্নামে পাঠানোর পরেও কি কখনও শাফায়াতের মাধ্যমে কাকেও আর জান্নাত লাভের সুযোগ আছে ?

উত্তর : না , তা কখনও হবে না । তবে বিশেষ শর্ত স্বাপেক্ষে শেষ বিচারের রায়ের পূর্বে জাহান্নাম বা জান্নাতের স্তরের পরিবর্তন আল্লাহর ইচ্ছায় হতে পারে ।

এ প্রসংগে আরো কোন প্রশ্ন থাকলে নির্দিধায় লিখে জানাতে পারেন ।

এ প্রসংগে একটি কথা আলোচনার দাবী রাখে ,

যেখানে নবী ক: স: নিজেই জানেন না তাঁর শাফায়াত আল্লাহ কবল করবেন কিনা , সেখানে আমাদের পার্থিব জীবনে কোন পীর , আউলিয়া বা কে এমন আছে যে , যাকে শাফায়াতের জন্য মনোনীত করা হবে এবং মনোনীত হলেও তার শাফায়াত কবুল হবে ?

তেমনি বাবা ছেলে-মেয়েদের জন্য বা ছেলে-মেয়ে বাবা-মার জন্য ও শাফায়াত এর যোগ্যতা অর্জন করার শর্ত পরিপূর্ন না করলে , শাফায়াত করতে পারবেন না ।

৬। তওবা করার শেষ সময়: নফস / আক্বল / চেতনা বোধ সচল থাকা পর্যন্ত বা গড়-গড়া আসার আগ পর্যন্ত তওবা করার ও কবুল হওয়ার শেষ সময় ।

আমীন ।।

No comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *