মানুষে মানুষে বিভেদ বা মত পার্থক্য , মারা-মারি কেন হয় ও উত্তরণের উপায় ?

প্রান প্রিয় পাঠক সমুদয় ,

‎السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

আজকের বিষয় : মানুষে মানুষে বিভেদ বা মত পার্থক্য , মারা-মারি কেন হয় ও উত্তরণের উপায় ?

একটু চিন্তা করুন রুহানী জগত থেকে শুরু করে

মাতৃগর্ভ হয়ে ভুমিষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত কারো সাথে কারো কোন বিভেদ বা মত পার্থক্য ছিল না , নাই এবং ধরে নেয়া যায় ভবিষ্যতেও থাকার কোন সম্ভাবনাও নেই ।

অথচ তখনও কিন্তু প্রতিটি মানুষ থেকে প্রতিটি মানুষ আলাদা । বিবেক বা আল্লাহ প্রদত্ত Common Sense / আসলী জ্ঞানও কিছুটা আলাদা হলেও জ্ঞানের মূল আদর্শ এক ছিল ।

তবে সেখানে নেই শক্তি , সামর্থ , অহংকার ও নীতি গত বৈষম্য ।

তাহলে এবার কি আমরা ধরে নিতে পারি না যে ,

জন্ম পরবর্তি শিক্ষা, শক্তি , সামর্থ , অহংকার ও নীতি গত বৈষম্য আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরী করে?

* আশা করি সবাই এক মত হবেন ।

তম্মধ্যে শিক্ষাই হল মূল কারন যার দ্বারা বিভেদ ও বৈষম্যের সূচনা হয় । যেমন :

১। একই পরিবারের, ক্লাসের , জাতের , প্রতিষ্ঠানের , গোত্রের , সমাজের , দেশের শিক্ষার্থীদের চেয়ে অন্য পরিবারের, ক্লাসের ,

জাতের , প্রতিষ্ঠানের , গোত্রের , সমাজের ,

দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য বেশী ।

২। একই দলের সদস্যদের থেকে অন্যদলের সাথে বৈষম্য বেশী ।

৩। এভাবে আলেমের সাথে আলেমের , মু’মিনের সাথে মু’মিনের , মুসলিমের সাথে অমুসলিমের

এবং এভাবে যতই বেশী ভিন্ন জ্ঞানবোধ ততবেশী বৈষম্য লক্ষ করা যায় ।

কিন্তু আল্লাহর দৃস্টিতে সকল মানুষকে মৌলিক দিক থেকে একই ধরনের আক্বল দিয়ে সৃস্টি করেছেন

এবং প্রকাশ্য ভাবে কারো প্রতি কোন যুলুম করা হবে না বলে ঘোষনাও দেয়া হয়েছে ।

অতপর জ্ঞানের উৎস বা আধার হিসেবে

কোরআনও সুন্নাহ সকল মানবের জন্য নাযিল করা হয়েছে ।

তাই যদি দুনিয়ার সকল মানুষ জন্মের পরেই

কোরআন ও হাদিসের জ্ঞান লাভ করতে পারত ,

তাহলে নিশ্চয়ই বিভেদ বা বৈষম্যের মাত্রা সিংহভাগ কমে আসত ।

সুতরাং কোরআন ও হাদিসের জ্ঞানের অজ্ঞতাই বিভেদ ও বৈষম্যের মূল কারণ হিসেবে স্বীকার করা যায়।

এরপরেও কোরআন ও হাদিস যেহেতু আরবী ভাষায় নাযিল করা হয়েছে এবং সেখানে দুনিয়ার সকল মানব জাতীর জন্য জীবন বিধান করা হয়েছে , তাই তা ধারন করা বা বুঝার জন্য মানুষকে বিভিন্ন ধারায় শিক্ষালাভ করা অতীব বাঞ্ছনীয় ।

আর তা না থাকার কারনেই এক জন বা দল আরবী ভাষা জানা লোকের সাথেও অন্য জন বা দলের মধ্যে বিভেদ লক্ষ করা যায় ।

এভাবেই আমরা বিভিন্ন দলে বা গোত্রে বিভক্ত হয়ে যাই যার মূল কারন অসম শিক্ষা এবং কোরআনের শিক্ষা জ্ঞান না থাকা ।

প্রশ্ন : ধরুন দুই বা ততোধিক ব্যাক্তি দল বা গোত্রের মধ্যে বিভেদ সৃস্টি হল । এর মধ্যে এক জন বা দল

অন্য জন বা দলকে আগে মেরে বসল । অন্য জন বা দল তা চেয়ে চেয়ে দেখল । তাহলে কে বা কোন দল বেশী অজ্ঞ বা মুর্খ্য ?

উত্তর : নিশ্চয়ই যিনি বা যে দল আগে মেরেছে ।

এভাবেই একটু চিন্তা করুন যারা আগে শক্তি প্রদর্শন করেন তারা শিক্ষায় কাঁচা , যুক্তিতে কাঁচা ।

তাঁরাই বেশীর ভাগ কোরআন ও হাদিসের জ্ঞানে অপরিপক্ক ।

তাঁরাই বেশী জাহান্নামী হবেন ।

একটু চিন্তা করুন , জাহান্নামে যাবেন না কি জান্নাতের ইচ্ছা আছে ?

যদি থাকে আমার এ দাওয়াত পাওয়ার পর থেকে

কোরআন ও হাদিসের জ্ঞানে মননীবেশ করুন ।

অন্যকে সহযোগীতা করুন ।

স্বরন করুন : ঈমান মানে হ’ল – জ্ঞান + বিশ্বাস ।

আগে কোরআন ও হাদিসের জ্ঞান লাভ করতে হবে এবং পরে বিশ্বাস করতে হবে ।

আর তা নাহলে আল্লাহর লা’নত অবধারিত ।

আর আল্লাহর লা’নত ধারীদের জন্য কোন সাহায্য কারী বা সাফায়াত থাকবে না । মানে হল জাহান্নামে স্থায়ী আবাস ।

*। কারো সাথে কারে বিভেদ লক্ষ্য করা হলে , আগে বিতর্ক নয় বরং কিতাব বা স্বীকৃত দলীল দ্বারা

সমাধান করুন ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহীহ বুঝদান করুন ।

আমীন

No comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *