নামাজ আদায়ের নিয়মাবলী ও শর্ত কি ?

প্রিয় পাঠক বৃন্দ ,

‎السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

এই একই বিষয়ের উপরে আরো একদিন লিখেছিলাম । তার পরও কেমন যেন মনে হল আরো কিছুটা খোলাসা করলে অধিক পরিমান সাধারণ মানুষ সহজ করে উপলব্দি করতে পারবেন । আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝদানে সহায় হোন ।

একটু সহজ করে চিন্তা করুন । ধরুন একটি সন্তান কোন এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি ক্লাশে ভর্তি হল ।

তাহলে স্বাভাবিকভাবেই কয়েকটি অলিখিত ও লিখিত শর্ত মনের থেকে মেনে নেয়ার শর্ত পালন করল বা নীতিগত ভাবে মেনে চলার শর্ত পূরণ করল। যেমন :

১। স্কুলের নিয়ম কানুন মানার অঙ্গীকার ।

২। সময়মত হাজির হবার অঙ্গীকার ।

৩। ড্রেসকোড মানার অঙ্গীকার।

৪। ঠিক মত পড়া ও পাঠ্য সুচি বুঝে পড়ার অঙ্গীকার।

৫। ভাল ফলাফলসহ উত্তীর্ণ হওয়ার অঙ্গীকার।

৬। চরিত্র গঠনে আদব কায়দায় আদর্শ মানার অঙ্গীকার।

৭। স্কুলের নিয়ম ছাড়াও ক্লাস শিক্ষকদের নিয়ম মানার অঙ্গীকার।

৮। ক্লাসের সহপাঠিদের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখার অঙ্গীকার।

ইত্যাদি ।

আর এগুলোর কোনটি না মানলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যে কোন সময়ে বহিস্কার করার ক্ষমতা সংরক্ষন করেন । যদিও সন্তান টাকা দিয়ে ভর্তি হন ।

তাহলে এবার ভাবুন নামাজ হল আল্লাহ নির্ধারিত অনেক আকিদার মধ্যে অন্যতম দৈনন্দিন জীবনে আদায় যোগ্য একটি আকিদা ।

যা আদায় করার জন্য ও আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার জন্য অনেক শর্ত পালন করতে হয় ।

যা পালন না করলে আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন ও আমাদের নামাজ কবুল করবেন না এবং তিনি কবুল করার জন্য দায়বদ্ধমূল নন ।

আর এ সকল শর্ত এতটাই আমলের যা লিখে শেষ করা কষ্ট সাধ্য । তথাপিও আমল করতে উদ্দত হওয়ার নিমিত্তে কিছু শর্ত নিম্নে দৃষ্টান্ত সরূপ দেওয়া হল :

সূরা মাউন ১-৬ । শর্ত :

১। যারা দ্বীন ( ধর্ম , ন্যায় বিচার ও কর্মফল ) সম্পর্কে মিথাচার বা অস্বীকার করে ।

২। যারা ইয়াতীমদের রূঢ়ভাবে তাড়াইয়া দেয় ।

৩। অভাবগ্রস্থকে খাদ্যদেনে উৎসাহ দেয় না ।

৪। যারা যারা সালাত বা নামাজ আদায়ে উদাসীন ।

৫। যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ আদায় করে ।

৬। যাকাত সহ গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোট-খাট সাহায্যদানে বিরত থাকে ।

‎* فويل للمصلين

* সুতরাং দুর্ভোগ সেই নামাজ আদায়কারীদের ।

তাই যারা নামাজ আদায়ের তথা কবুলের লক্ষ্যে এতদসংক্রান্ত শর্ত পালন করে না , তাদের জন্য দু্র্ভোগের কথা আল্লাহ স্বরণ করিয়া দিয়েছেন ।

পক্ষান্তরে এগুলো সবই নামাজ আদায় তথা কবুল হওয়ার জন্য শর্ত ।

** নামাজ আদায়ে উদাসীনতার কারণ ও প্রেক্ষাপট :

দেখুন কোন শিক্ষার্থি বা উপস্থিত জনতা যদি ইংরেজী বা আরবী না বুঝে আর সেখানে যদি কেহ ইংরেজী বা আরবীতে পাঠদান বা বক্তৃতা প্রদান করেন, তাহলে কি তারা উদাসীন হবে না ?

তাছাড়াও যদি দ্রূত বক্তৃতা দেন যা বোধগম্য নয় তখনও তো উদাসীন হতেই পারে ।

সুতরাং অধিকাংশ মানুষ যারা নামাজে পঠিতব্য সূরা-কালাম , তথবিহ-তাহলীল না বুঝে নিষ্ঠার সাথে আদায় করে না তারা ই নামাজে উদাসীন । যা নামাজ কবুল হওয়ার শর্তের আওতাবদ্ধ ।

** তাছাড়া নামাজ আদায় প্রক্কালে নামাজের চেয়ে অন্য কোন কাজকে বেশী গুরুত্ব মনে করলেও উদাসীন হওয়া স্বাভাবিক ।

** নিষ্ঠার সহিত সালাত সম্পন্ন করা : নামাজ অবশ্যই ধীর-স্থির ভাবে তাড়া-হুড়া না করে নিষ্ঠার সাথে আদায় করতে হবে ।

বলা বাহুল্য আপনি নামাজ আদায় করার লক্ষ্যে ও উদ্দেশ্য হল , নামাজ আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়া।

তাহলে যদি শর্তই পালন না করি তবে কি নামাজ কবুল হবে ???

গ) নামাজ আমাদের প্রতিদিনই শিক্ষালাভ করার উপকরণ হিসেবে আল্লাহর দেয়া অন্যতম নেয়ামত । যা খারাব কাজ ও চিন্তা থেকে দুরে রাখে ।

মানব জাতি পরিশুদ্ধ হওয়ার অন্যতম ইবাদত নামাজ ।

** এছাড়া ও আরো অনেক শতসিদ্ধ শর্ত আছে যেমন : নামাজ আদায় করার জন্য মু’মিন হওয়ার শর্ত এবং মু’মিন হতে হলে নামাজ আদায়ের শর্ত প্রযোয্য ।

তাহলে এবার একটু ভাবুন আমরা কে কে মুমিন ?

আর সকল শর্ত ও নিয়ম মানার স্বাপেক্ষে কার কার নামাজ কবুল হতে পারে ?

আর এই সকল শিক্ষার একমাত্র উৎস কোরআন ।

যা অধ্যায়ন করা ফরজ করা হয়েছে ।

অথচ মানব জাতিকে ইবলিস এর থেকে কত কৌশলে দুরে ঠেলে দিল যা মানুষ আজও উপলব্দি করতে পারল না ?

আমীন ।।

আহমেদ জাফর ।

No comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *