নেতা হওয়ার যোগ্যতা ও নেতার আমানতের মাপ কাঠি কি রকম হওয়া উচিত ?

প্রান প্রিয় পাঠক সমুদয় ,

‎السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

আজকের বিষয় : নেতা হওয়ার যোগ্যতা ও নেতার আমানতের মাপ কাঠি কি রকম হওয়া উচিত ?

সূরা নিসা : আয়াত নং ৫৮ এর শানে নূযুল থেকে পাওয়া যায় উসমান ইবনে তালহা হাজীবি ছিলেন কা’বার চাবির অধিকারী ।

নবী করীম স: মক্কায় প্রবেশ করার পরে উসমান দরজা বন্ধ করে ছাদের উপরে উঠে যান । তখন নবী স: এর নির্দেশে আলী রা: উসমানের থেকে

জোর করে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে কা’বার দরজা খুলে দেন । নবী ক: স: দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বের হওয়ার সময় আব্বাস রা: যিনি পানি পান করানোর দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, তিনি চাবিরও দায়িত্ব ভার নিতে চাইলেন । তখন এই আয়াত খানা নাযিল করে মূলত: তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন :

১। আমানত কারীর আমানত তাঁর হক্বদারকে বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ ।

২। খলিফা বা নেতা হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন লোককে নেতা বানানোর নির্দেশ ।

৩। ন্যায় বিচারের নির্দেশ ।

ব্যাখ্যা : উসমান কা’বার চাবির অধিকারী ছিলেন কিন্তু তিনি তখনও মু’মিন ছিলেন না বিধায় নবী ক: স: মক্কায় আসার পরও তিনি চাবি দিতে অস্বীকার করেছিল ।

পরে আলী রা: পুন:রায় চাবি দিবেন কি না তা নিয়ে দিধা দন্দে ছিলেন । তখন আল্লাহ রব্বুল আলামীন এই সূরা নাযীল করে আমানত কারীর হক্ব সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন ও চাবি পুন: রায় উসমানের কাছে দিলেন ।

তখন আল্লাহর এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর সুস্ঠ বিচারে মুগ্ধ হয়ে তখনই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলেন ।

আমাদের জন্য শিক্ষনীয় :

ক) প্রত্যেক পরিবারের কর্তা তার পরিবারের জন্য আমানতদার ।

খ) তদ্রূপ শিক্ষক তার ছাত্র -ছাত্রীদের জন্য আমানতদার ।

গ) ঈমাম তার মুসল্লীদের জন্য আমানতদার ।

ঘ) নেতা ও নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের স্ব-স্ব কর্তব্য পালনের জন্য তার গুরু দায়িত্বের আমানতদার ।

ঙ) দেশের প্রেসিডন্ট বা প্রধান মন্ত্রী – তার দেশের সকল মানুষের জন্য আমানতদার ।

সুতারাং

ক) এই আমানত খেয়ানত করলে বা

খ) দায়িত্ব অবহেলা করলে ,

গ) দায়িত্ব পালন করার মৌলিক জ্ঞান বা কোরআনের জ্ঞান না থাকলে ,

ঘ) জোর করে দায়িত্ব বা আমানত আকড়ে ধরলে ,

ঙ) ন্যায় বিচার করার প্রজ্ঞা না থাকলে ,

চ) অন্যায়ভাবে আমানতের খেয়ানত করে কষ্ট দিলে ,

ছ) আল্লাহর নির্দেশিত আইনের বাহিরে আইন করে বিচার কাজে প্রভাবিত করলে ,

তারা মুনাফিক হিসেবে গন্য হবেন এবং তার স্থায়ী ঠিকানা জাহান্মাম :

তদ্রূপ সাধারন জনগনের উপরও আমানত হল :

ক) তাঁর ভোটাধিকার ।

খ) ন্যায় বিচারের স্বার্থে যোগ্য নেতা নির্বাচন করা ইত্যাদি ইনসাফের ভিত্তিতে না করলে তিনি মুনাফিক হিসেবে গন্য হবেন এবং তার ও স্থায়ী ঠিকানা জাহান্নাম ।

তবে এ সকল ক্ষেত্রে ওযোর , আপত্তি ,

অনুশোচনা এবং পরিত্রেনর উপায় অধিক জোরদার হলে তখন ভিন্ন কথা ।

বাস্তবতার নিরীক্ষে নেতা , কর্তা , ঈমাম হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য কয়েকটি বিষয় অতীব প্রয়োজন । যেমন :

ক) আল্লাহ প্রদত্ত অপ্রমানিত Common Sense / আক্বল পরিপক্ক হতে হবে ।

খ) কোরআন ও হাদীসের প্রমানিত জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে ।

গ) স্ব-স্ব দায়িত্ব পালনের জন্য সেই বিষয়ে প্রখর জ্ঞান থাকতে হবে ।

ঘ) ন্যায় বিচারিক প্রজ্ঞা ও ক্ষমতা থাকতে হবে ।

ঙ) কোরআনের আইনে পরিপক্ক থাকতে হবে ।

চ) লোভ-লালসার উর্ধে থাকতে হবে ।

তাই আসুন উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে নেতা ও সাধারন জনগন সবাই নিজ নিজ অঙ্গনে একটু চিন্তা করি । আমরা কতটুকু দায়িত্ব পালন করছি ?

এবং কতটুকু করছি না ?

করার জন্য কি পদক্ষেপ নেয়া যায় তা বিচার করি ।

নেতা নির্বাচনে সচেতন হই ।

জ্ঞানহীন , পাগল ও ইবলিস সদৃশ কোন লোককে গুরু দায়িত্ব দিয়ে আমরা জাহান্নামী না হই ।

আমীন

No comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *